বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষক
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২০-০২-২০২৫ ০৩:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২০-০২-২০২৫ ০৩:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
ফেনীর ৬ উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিগত আমন মৌসুমে বন্যার ব্যাপক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকেরা বেশি আগ্রহ নিয়ে নেমেছে বোরো ধান চাষে। এ ছাড়া বন্যা-উত্তর পুনর্বাসনের আওতায় বীজ, সারসহ সরকারি সুবিধা পেয়ে কৃষকেরা আরও বেশি উৎসাহী হয়েছেন। তবে সেচের পর্যাপ্ত পানি নিয়ে সংশয় কৃষকদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬ উপজেলায় হাইব্রিড ৫ হাজার ৩৩৫ হেক্টরের স্থলে ৫ হাজার ১১৫ হেক্টর, উফশী ২৫ হাজার ৯৬৫ হেক্টরের স্থলে ২১ হাজার ৬৮০ হেক্টর চাষ সম্পন্ন হয়েছে। ১৫ মার্চ পর্যন্ত বোরো ধান চাষ চলতে থাকবে। এতে লক্ষ্যমাত্রার বেশি বোরো ধান চাষ হবে বলে কৃষি বিভাগের আশাবাদ।
সূত্র জানায়, বীজতলা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৫১১ হেক্টর। এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১০০ হেক্টর বেশি বীজতলা হয়েছে। এতে চাষও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, প্রণোদনা পেয়ে অন্য বছরের তুলনায় নানা রকমের সবজিসহ রবি ফসলও বেশি আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে সরিষা ও খেসারিসহ বিভিন্ন ফসল উঠতে শুরু করেছে। রবি ফসল ওঠা শেষ হলে এসব জমিতে বোরো ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে জানা গেছে, বন্যা এবং বৃষ্টির পানি দিয়ে আগাম চাষ শুরু করলেও মৌসুমের শেষে পানি নিয়ে আশঙ্কায় আছেন কৃষকেরা। দাগনভূঞা উপজেলার ওমরাবাদ গ্রামের কৃষক আবু তাহের বলেন, ‘শীত মৌসুম শেষ হলে গরম আসতে না আসতেই বিদ্যুত সংকট দেখা দেয়। তখন বোরো ধান ক্ষেতে প্রয়োজনমতো পানি দেওয়া যায় না। এ ছাড়া এবারের বন্যায় জেলার বিভিন্ন স্থানে সেচযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ায় শুরুতেই পানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।’
পরশুরামের বীর চন্দ্র নগরের কৃষক আবদুল হক জানান, তার পাম্পের আওতায় প্রায় ৮ একর জমি চাষ হতো। এবার বন্যায় সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পাশের পাম্প থেকে বেশি খরচে পানি সংগ্রহ করছেন। বন্যায় ওই এলাকার বেশ কয়েকটি অগভীর নলকূপ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা আশপাশের পাম্প থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। শেষ পর্যন্ত পানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে কি না এ নিয়ে সংশয়ে আছেন অন্যরা।
সরকারি হিসাবমতে, ৮ শতাধিক সেচযন্ত্র কম চালু হয়েছে। বিগত বোরো মৌসুমে ১৭টি গভীর নলকূপের মধ্যে এবার চালু হয়েছে ১৩টি। এ ছাড়া অগভীর ২ হাজার ৯৩০টির মধ্যে ২ হাজার ৩৯১টি এবং এলএলপি ১ হাজার ২৩৫টির মধ্যে ১ হাজার ৩১টি চালু হয়েছে।
কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) পুষ্পেন্দু বড়ুয়া জানান, বিগত বছরের চেয়ে এবার বোরো ধান চাষ বেশি হচ্ছে। পানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে উৎপাদনও লক্ষ্যমাত্রার বেশি হবে বলে তিনি আশাবাদী।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, বন্যা পরবর্তী কৃষি প্রণোদনা পেয়ে কৃষকেরা বোরো ধান চাষে বেশি উৎসাহী হয়েছেন। এ ছাড়া বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দিচ্ছে।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স